www.agribarta.com:: কৃষকের চোখে বাংলাদেশ
শিরোনাম:

কৃষি থেকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে প্রযুক্তির ব্যবহার


 মো. আখতারুজ্জামান    ৯ ডিসেম্বর ২০২২, শুক্রবার, ৮:২৩   সম্পাদকীয় বিভাগ


কৃষি কার্যক্রমগুলো গ্রিনহাউজ গ্যাসের উৎস এবং মজুদকরণ উভয় হিসেবেই কাজ করে। গ্রিনহাউজ গ্যাসের কৃষি ক্ষেত্রে মজুদকরণ কার্বনের ভাণ্ডার তৈরি এবং এটি কার্বন সিকোয়েস্টেশনের জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল থেকে শোষিত হয়। কৃষিতে গ্রিনহাউজ গ্যাসের প্রাথমিক উৎস হলো নাইট্রোজেনভিত্তিক সার ব্যবহার, খামারের যন্ত্রপাতি দ্বারা ব্যবহূত জীবাশ্ম জ্বালানির দহন এবং কৃষি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। তৃণভোজী প্রাণীদের পরিপাকতন্ত্রে সংঘটিত গবাদিপশুর আন্ত্রিক গাঁজন-এর মাধ্যমে মিথেনের নির্গমন হয়।

গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের প্রধান কৃষিজ উৎসগুলো হলো মাটি থেকে নাইট্রিক অক্সাইড, গবাদিপশুর আন্ত্রিক গাঁজন থেকে মিথেন, জৈববস্তু পোড়ানো থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং রাসায়নিক সার থেকে মিথেন। রাসায়নিক সার প্রয়োগ এবং কৃষি বর্জ্য মাটিতে শোষিত করার ফলে নাইট্রাস অক্সাইডের নির্গমন ঘটে। অনুরূপভাবে মাটিতে ইউরিয়া এবং চুন প্রয়োগের ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের নির্গমন ঘটে। ‘স্বল্প কার্বন অর্থনীতি’ শব্দের কোনো সর্বজনস্বীকৃত সংজ্ঞা নেই। অনুমান করা হয় যে ‘স্বল্প কার্বন অর্থনীতি’ অনেক কার্যসমষ্টি যা টেকসই উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসে অবদান রাখে। একটি স্বল্প কার্বন অর্থনীতিতে পরিবর্তন নির্ভর করে কৃষিসহ অন্যান্য শিল্প খাতে যথাযথ ব্যবহারিক ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর। নাইট্রাস অক্সাইড এবং মিথেনের মোট নির্গমনে কৃষির একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। সার্বিকভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনে কৃষির ভূমিকা তুলনামূলক কম, কারণ মাটিতে এর সিকোয়েস্টেশনের মাধ্যমে কৃষি থেকে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রাণী ও উদ্ভিদ উৎপাদন উভয়ই কৃষিজ নির্গমনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বিবেচনার দৃষ্টিকোণ থেকে নাইট্রাস অক্সাইড একটি মৌলিক নির্গমন। এ গ্রিনহাউজ গ্যাসের তাপ শোষণের ক্ষমতা কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে ৩০০ গুণ বেশি। নাইট্রাস অক্সাইড পানিতে খুব কম দ্রবণীয়, এটি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে পতিত হয় না এবং বায়ুমণ্ডলে এটি আনুমানিক ১৫০ বছর সঞ্চিত থাকে। মানুষের ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে জড়িত নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমনের বেশির ভাগই মাটিতে নাইট্রোজেন সারের অবাঞ্ছিত পচন (প্রাকৃতিক এবং খনিজ সার) দ্বারা সৃষ্ট হয়। মাটিতে নাইট্রোজেন প্রয়োগ ছাড়াও মাটির তাপমাত্রা, অক্সিজেনেশন, হাইড্রোকার্বনের প্রাপ্যতা, pH এবং মাটির আর্দ্রতার মতো কারণগুলোও নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমনের ওপর প্রভাব ফেলে। মাইক্রোবায়োলজিক্যাল প্রক্রিয়ার আলোকে ডিনাইট্রিফিকেশন এবং স্বল্প পরিমাণে নাইট্রিফিকেশন, নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমনের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুভাবেই কৃষিজ মাটি থেকে নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন ঘটে। বেশির ভাগ পরোক্ষ নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন ঘটে অ্যামোনিয়া নির্গমন এবং নাইট্রোজেন লিচিংয়ের কারণে আর প্রত্যক্ষ নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন মূলত নাইট্রোজেন সার ব্যবহার এবং প্রাণীর মলে জৈব নাইট্রোজেন থেকে নাইট্রাস অক্সাইড নিঃসরণের কারণে ঘটে। মাটিতে নাইট্রোজেন সারের নিবিড় প্রয়োগ নাইট্রাস অক্সাইড গঠনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। ওপরে উল্লিখিত যৌগগুলোর নির্গমন কৃষিজ মাটির অম্লকরণ এবং প্রাকৃতিক ইকোসিস্টেমের ইউট্রোফিকেশন কোনো কেমিক্যালের আধিক্য বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। এছাড়া নাইট্রাস অক্সাইড বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং ওজোন স্তর ক্ষয়ের জন্য দায়ী। কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের ওপর প্রভাব ফেলে। কৃষি ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টার ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে বায়ুদূষণের বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার। ফার্ম ট্রাক্টর এবং অন্যান্য ডিজেলচালিত যানবাহন থেকে নির্গত গ্যাসে নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, পার্টিকুলেট ম্যাটার এবং কার্বন মনোক্সাইড থাকে। মোট পরিবহন খাতের নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমনের ৬ শতাংশেরর বেশি কৃষি ট্রাক্টর থেকে আসে।

কৃষিতে কার্বন নির্গমন হ্রাসের জন্য ১০ কর্মকৌশল: একটি হলো ধানের খেতে মিথেন কমানোর প্রক্রিয়া, দ্বিতীয়টি হলো রাসায়নিক সারের পরিমাণ কমানো এবং কার্যকারিতা বাড়ানো, তৃতীয় ধাপ গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগি থেকে কার্বন নিঃসরণ কমানো, চতুর্থটি মত্স্য চাষ থেকে নির্গমন হ্রাস এবং পঞ্চমটি হলো কৃষি যন্ত্রপাতিতে গ্রিন এনার্জি ব্যবহার। ষষ্ঠটি হলো কৃষিজমিতে কার্বন মজুদকরণ বৃদ্ধি, সপ্তম খড়/উদ্ভিদ উচ্ছিষ্টাংশ জমির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া, অষ্টম নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, নবম বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে উৎসাহিত এবং দশমটি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রসার ঘটানো।

কার্বন সিকোয়েস্টেশন: বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করার জন্য কৃষিজমি এবং উদ্ভিদের ভূমিকাকে কার্বন মজুদকরণ/সিকোয়েস্টেশন বলা হয়। সালোক সংশ্লেষণের মাধ্যমে গাছপালা এবং ফসল কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং তা পরবর্তী সময়ে গাছের গুঁড়ি, শাখা, পাতা, শেকড় এবং মাটির জৈব পদার্থে কার্বন হিসেবে সঞ্চিত থাকে। বন এবং স্থিতিশীল তৃণভূমিগুলোকে কার্বন মজুদের আধার হিসাবে উল্লেখ করা হয় কারণ তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য তাদের গাছপালা এবং মূল সিস্টেমে প্রচুর কার্বন সঞ্চয় করতে পারে। মাটি হলো বিশ্বের বৃহত্তম স্থলজ কার্বন আধার। জলবায়ু, মাটির ধরন, ফসলের ধরন বা গাছপালার আবরণ এবং ফসল ব্যবস্থাপনা অনুশীলনসহ বিভিন্ন কারণের ওপর কৃষিজমির কার্বন সঞ্চয় বা পৃথক করার সক্ষমতা নির্ভর করে। মাটির জৈব পদার্থে সঞ্চিত কার্বনের পরিমাণ উদ্ভিদের পচনশীল উপাদান থেকে কার্বন নির্গমন এবং শ্বসনের মাধ্যমে হ্রাস পায় যা পচন প্রক্রিয়া ও মাটির প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট বিপর্যয় দ্বারা প্রভাবিত হয়। মাটির গুণাগুণ বজায় রেখে কার্বন সিকোয়েস্টেশনকে বৃদ্ধি করে এরূপ চাষাবাদের কৌশল ব্যবহার করে কৃষক তাদের খেত থেকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কৃষির ভূমিকা: মাটিতে কার্বন সঞ্চয় স্থান উন্নত করে, বিদ্যমান মাটির কার্বন সংরক্ষণ এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন হ্রাস করে—এমন বেশকিছু কৃষি পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।

কনজারভেশন টিলেজ এবং কভার ক্রপ্স: পুরনো ফসলের অবশিষ্টাংশ মাটিতে যোগ করে বিনা চাষে বা স্বল্প চাষে নতুন ফসল রোপণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিকে কনজারভেশন টিলেজ বলে। চাষাবাদ হ্রাস করলে মাটির ক্ষয় কমে এবং মাটির কার্বনের বায়ুমণ্ডলীয় নির্গমন সীমিত করতে সহায়তা করে। কনজারভেশন টিলেজ মাটির কার্বন সিকোয়েস্টেশন ক্ষমতাও উন্নত করে। কনজারভেশন টিলেজের অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে উন্নত পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, মাটির ক্ষয় হ্রাস, জ্বালানি ব্যবহার হ্রাস, মাটির জমাট বাঁধা হ্রাস, রোপণ এবং ফসল সংগ্রহের সময়ে তারতম্য বৃদ্ধি, শ্রমিক ব্যয় হ্রাস এবং ফসল ফলানোর জন্য মাটির স্বাস্থ্যের উন্নয়ন।

আধুনিক চাষাবাদ এবং জৈব চাষাবাদ পদ্ধতি: সাম্প্রতিক গবেষণায় গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমাতে জৈব কৃষির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জৈব কৃষি পদ্ধতি জৈব সার এবং কভার ক্রপ ব্যবহার করে মাটির জৈব পদার্থের মাত্রা বৃদ্ধি করে। জৈব চাষাবাদ পদ্ধতি রাসায়নিক সার উৎপাদন এবং পরিবহন থেকে নির্গমন কমায়। কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস করতে জৈব কৃষির উপাদানগুলো কনজারভেশন টিলেজসহ অন্যান্য টেকসই কৃষি ব্যবস্থার সঙ্গে প্রয়োগ করা যেতে পারে। সাধারণত কনজারভেশন টিলেজ পদ্ধতি আর্দ্রতা সংরক্ষণ করে, ফলন বৃদ্ধি এবং ভূমি ক্ষয় ও জ্বালানি ব্যয় কমিয়ে মাটির কার্বন বৃদ্ধি করে। ঝড়ো বাতাস প্রতিরোধকারী গাছের সারি, গবাদিপশুর পর্যায়বৃত্ত চারণ, বহুবর্ষজীবী ঘাস, গ্রীষ্মকালীন পতিত জমি কমিয়ে ফেলা এবং যথাযথভাবে খড়ের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হ্রাস এবং মাটির কার্বন বৃদ্ধি করা যায়। এছাড়াও উচ্চফলনশীল শস্য বা জাত ব্যবহার করে এবং সর্বোচ্চ ফলনের মাধ্যমে মাটির কার্বন বৃদ্ধি সম্ভব।

জমির পুনরুদ্ধার এবং জমি ব্যবহারের পরিবর্তনগুলো: সাধারণত জমির পুনরুদ্ধার এবং জমি ব্যবহারের ফলে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলো মাটি, পানি এবং বায়ুর গুণগতমান রক্ষা এবং উন্নতিতে সহায়তা করে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাস করে থাকে। টেকসই গবাদিপশুর পর্যায়বৃত্ত চারণ এবং রেঞ্জল্যান্ডের মৌসুমি ব্যবহারের মতো বিভিন্ন ধরনের চারণ পদ্ধতি দ্বারা গ্রিনহাউজ গ্যাস হ্রাস করা যেতে পারে। প্রান্তিক ফসলি জমিতে গভীর মুলি তুলাচাষ, বৃক্ষরোপণ বা ঘাস চাষ করলে তুলনামূলক কম উর্বর ফসলি জমিতে কার্বনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা: যথাযথ সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন কৃষিপ্রযুক্তি যেমন স্প্রিংকলার সেচ প্রযুক্তি, ডিপ সেচ প্রযুক্তি এবং ভূ-উপরিস্থ সেচ ব্যবহারের মাধ্যমে সময় হ্রাসসহ চাষাবাদে প্রয়োগকৃত পানি ও নাইট্রোজেনের পরিমাণ এবং গ্রিনহাউজ গ্যাস উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস সম্ভব।

নাইট্রোজেনের কার্যকর ব্যবহার: জিপিএস ট্র্যাকিংসহ সঠিক চাষাবাদের কৌশলগুলো প্রয়োগের মাধ্যমে সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন হ্রাস করা যেতে পারে। এছাড়াও অন্য পদ্ধতিগুলোর মধ্যে কভার ক্রপ, জৈব সার, নাইট্রোজেন ফিক্সিং ফসল চাষাবাদ, সমন্বিত কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

মিথেন গ্যাস নিয়ন্ত্রণ: গবাদিপশুর বর্জ্য বিশেষ করে দুগ্ধখামারের গবাদিপশুর বর্জ্য নাইট্রাস অক্সাইড এবং মিথেনের উল্লেখযোগ্য নির্গমনের জন্য দায়ী। অ্যানেরোবিক পরিপাক প্রক্রিয়া প্রাণীর বর্জ্য থেকে মিথেনকে বায়ুমণ্ডলে নির্গমন হওয়া রোধ এবং শক্তিতে রূপান্তরিত করে। এ মিথেন থেকে জ্বালানি উত্পন্ন করে খামারের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং পাশাপাশি বিদ্যুৎও উত্পন্ন করা যেতে পারে। উপরন্তু এতে গবাদিপশুর বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ কম ছড়ায় এবং গবাদিপশুর বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্য শ্রমিক খরচও বাঁচানো যায়।

অন্যান্য নবায়নযোগ্য শক্তি: বায়ু এবং সৌরশক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তি গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য কৃষি খাতকে উল্লেখযোগ্য সুযোগ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং ইকোসিস্টেমের ব্যাঘাত হ্রাসের প্রয়োজনীয়তাই হলো স্বল্প কার্বন অর্থনীতি, উপরন্তু এর মাধ্যমেই টেকসই উপায়ে কৃষির উন্নয়ন সম্ভব। খাদ্যের উৎপাদন এবং ব্যবহারের পরিবর্তন, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো, প্রাকৃতিক সম্পদের দক্ষ ব্যবহার ও সংরক্ষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জৈবিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং শক্তি নিরাপত্তা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা স্বল্প কার্বন কৌশল অনুশীলন করে কৃষি খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারি। গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং কৃষিতে স্বল্প কার্বন কৌশল অনুশীলনের ফলে এ উদ্যোগ আরো ত্বরান্বিত হবে। একটি কৃষিভিত্তিক স্বল্প কার্বন অর্থনীতির বিকাশে আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞান ও উদ্ভাবন প্রয়োজন। সে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ হ্রাস করার জন্য উদ্ভাবনী কৃষি উৎপাদন পদ্ধতি যেমন জৈবসার এবং জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত, জিপিএস ব্যবহার করে সঠিক কৃষিপ্রযুক্তির প্রয়োগ, খামারে কম নির্গমন শক্তি উদ্ভাবন যেমন—বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন, পর্যায়বৃত্ত ফসলের চাষ করে মাটির জৈব পদার্থ বৃদ্ধি এবং পশুখাদ্যে নাইট্রোজেন যোগ করা উচিত। স্বল্প কার্বন অর্থনীতিতে পরিবেশগত অবস্থার যৌক্তিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ব্যবহূত প্রযুক্তিগত সরঞ্জামের যথাযথ প্রয়োগের ওপর নির্ভরশীল।

  • মো. আখতারুজ্জামান: নির্বাহী পরিচালক, তুলা উন্নয়ন বোর্ড



  এ বিভাগের অন্যান্য